নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০ : ৪০

প্রথম পরিচালনা হিন্দি ছবি ‘সুজিকিউ’। ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ন্যাশনাল বিভাগে ছবিটি জায়গা করে নিয়েছে। তার আগেই দ্বিতীয় ছবি পরিচালনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন চন্দন রায় সান্যাল। ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হচ্ছে তাঁর ছবি। মুখ্য ভূমিকায় পার্নো মিত্র। আছেন প্রকাশ ঝা, চন্দন নিজে। তারই সাংবাদিক সম্মেলনে পরিচালক জানিয়েছেন, পার্নো নন, পাওলি দাম তাঁর প্রথম পছন্দ ছিলেন। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য তিনি সময় দিতে পারেননি। তখন তিনি পার্নোকে ভাবেন। এর আগে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ‘উড়োজাহাজ’ ছবিতে তিনি আর পার্নো একসঙ্গে কাজ করেছিলেন।

প্রথম ছবিতেই এই মুহূর্তের জনপ্রিয় ঘরানা ভয় আর রহস্য-রোমাঞ্চ একজোটে থাকছে। চন্দনও কি স্রোতে গা ভাসালেন? প্রশ্ন ছিল আজকাল ডট ইনের। নতুন পরিচালকের জবাব, ‘‘তিন বছর আগে করোনাকালে গল্প ভেবেছিলাম। ভাবতেই পারিনি, এই জঁর এত জনপ্রিয় হয়ে যাবে।’’ ছবিতে মধ্যবয়সী এক নারীর চরিত্রে পার্নো। যিনি ঘটনাচক্র স্বামীর খুনি। একই সঙ্গে প্রথম ছবি নারীকেন্দ্রিক... কথা লুফে নিয়ে চন্দন জানালেন, নারী চরিত্রে অনেক স্তর। যা তাঁকে অবাক করে। ছুঁয়ে যায়। একই সঙ্গে এও বুঝেছেন, নারী চাইলে সব করতে পারে, এমনকি খুনও। তাছাড়া, ভারতে নারীকেন্দ্রিক ছবি কম তৈরি হয়। এত কিছুর কারণেই তিনি ‘সুজিকিউ’ বানিয়েছেন। ছবির সিংহভাগ শুট গোয়ায়। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন তাঁর পরের ছবির কথাও। আগামী ছবির নাম ‘প্লেব্যাক সিঙ্গার’। ন’য়ের দশকে এক ভোজপুরী মহিলার নেপথ্য গায়িকার জীবন, তাঁর লড়াই তুলে ধরবে এই ছবি। বিষয় ভাবনা চন্দনের। অভিনয়ে প্রিয়াঙ্কা বসু, নিধি সিংহ, প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। শুট করতে করতেই চলে এসেছেন কলকাতায়। ঝটিতি প্রচার সেরে শনিবারেই তিনি ফিরে গিয়ে যোগ দেবেন শুটে।




এটা চন্দনের বক্তব্য। নিজের চরিত্র নিয়ে কী বলছেন পার্নো? তাঁর কথায়, ‘‘চন্দনকে অজস্র ধন্যবাদ, আমায় অন্য ধরনের চরিত্রে ভাবার জন্য। গ্রাম্য মেয়ের চরিত্র ছাড়া আমায় তো অন্য চরিত্রে কেউ ভাবতেই পারেন না। এটা আমার প্রথম হিন্দি ছবি। ফোনে কথা বলার পরে চন্দন চিত্রনাট্য পাঠিয়েছিলেন। পড়ে রাজি হয়ে যাই।’’ অভিনয় করতে করতে একটাই ভাবনা মাথায় ছিল, চরিত্রটা যেন রক্তমাংসের হয়ে ওঠে। তাঁকে দেখে যেন দর্শক ভয় পায়। তার মধ্যেই নায়িকার খুনসুটি, টানা ২২ ঘণ্টা খাটিয়েছেন পরিচালক। একটা সময়ের পরে ‘বাড়ি যাব’ বলে নাকি কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছিলেন! টানা বৃষ্টিতে ঠায় অপেক্ষা করতে হয়েছে রোদ ওঠার। সূর্য মুখ দেখাতেই শুটিং শুরু। পার্নোর দাবি, মুখ বুঁজে তিনি কাজ করে গিয়েছেন। পরিশ্রমের ফসল, এবছর তাঁর দুটো ছবি কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিয়েছে।

সম্প্রতি, রামকমল মুখোপাধ্যায়ের ‘নটী বিনোদিনী’তে অভিনয় করলেন চন্দন। ‘রং দে বাসন্তী’ ছবি দিয়ে তাঁর পেশাজীবন শুরু। তালিকায় অজস্র জনপ্রিয় ছবি। তারপরেও কেন পরিচালনায়? পরিচালকের যুক্তি, ‘‘সব অভিনেতারই ইচ্ছে থাকে গল্প বলার। তাই একটা হলেও ছবি পরিচালনা করতে চায় সে। আমার এখনও অনেক গল্প বলা বাকি। অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয়ও। আমি তাই দুটোই একসঙ্গে করতে চাই।’’ পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয় করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি তাঁর। টলিউড ডাকলে এখানেও এসে কাজ করে যাবেন। তবে যেহেতু হিন্দিতে তাঁর পরিচিতি বেশি তাই হিন্দি ছবি দিয়ে পরিচালনা শুরু করলেন। 

ছবি: বিপ্লব মৈত্র